২২ অক্টোবর, ২০২৫, ৬ কার্তিক, ১৪৩২
শোক সংবাদ, মানুষ হয়ে জন্মেছি - মানুষ আর হলাম কোথায়? বুকভরা অভিমান আর কষ্ট নিয়ে মৃত্যুর সাথে লড়াই করতে করতে অবশেষে মৃত্যুর কাছে হার মেনে নিষ্ঠুর এই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেলো মাগুরা চার (৪) ধর্ষিতা কিশোরী ছোট বাচ্চা মেয়েটি। বড় বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল বাচ্চা মেয়েটা। ফিরতে রাত হয়ে যাবে, এই কারনে বড় বোন বলেছিল এর পরের দিন বাড়িতে যেতে। বড় বোন কিছুক্ষণের জন্যে বাইরে গিয়েছিল।
মেয়েটা বোনের রুমে গুটিসুটি হয়ে শুয়ে ছিল এককোনায়। দুলাভাইও ছিল রুমে। বড় বোন ভেবেছিল তার হাসবেন্ড যেহেতু আছে তাহলে আর কোন সমস্যা হবে না। তারপর দুপুরের দিকে বড় বোন বাসায় এসে দেখে রুমে লাইট নিভানো, ঘুটঘুটে অন্ধকার। তড়িঘরি করে লাইট জ্বালিয়ে দেখে তার আদরের ছোট বোনটা এলোমেলোভাবে পড়ে আছে, চেহারাটা ফ্যাকাশে। বড় বোন বুঝতে পারেনা কি হয়েছে তার আদরের বোনটার সাথে। অনেকক্ষণ পর যখন বুঝতে পারে তখন অনেকটাই দেরি হয়ে গিয়েছিল। বড় বোন শাশুড়িকে হাতজোড় করে, তার বোনটাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্যে কিন্তু শাশুড়ি নিষেধ করছিল ঘটনাটা যাতে জানাজানি না হয়, হলে না-কি মানসম্মানে কমতি পড়বে তাদের। তারপর বহু কষ্টে শাশুড়িকে রাজি করিয়ে বড় বোন তার ছোট বোনটাকে নিয়ে আসে মাগুড়া হাসপাতালে। কোনরকম দায়সারা ভাবে হাসপাতালে দিয়েই শাশুড়ি পালিয়ে যায় সেখান থেকে। হাসপাতালে আনার পর বাচ্চা মেয়েটার অবস্থা আরও বেশি গুরুতর হয়ে পরে। ব্যথায় কাতরাচ্ছিল শুধু, বাচ্চা মেয়ে বয়স আর কত হবে? সাত অথবা আট। যৌনতার কিছুই বুঝে না, পুতল নিয়ে খেলার বয়স সবেমাত্র। মেয়ের মা এবং বোনের সন্দেহ দুলাভাই সজীব এবং শ্বশুর হিটুর প্রতি। জোরালো সন্দেহ দুলাভাই সজীবের প্রতি যেহেতু তার রুমেই ছিল বাচ্চা মেয়েটা। তৌহিদী জনতা এখন এই বাচ্চা মেয়েটার কি দোষ দিবে? তার তো ওড়না পড়ার বয়সও হয়নি। ওড়না পড়ার বয়স হলে নাহয় ওড়নার দোহাই দিয়ে দায়সারা যেত। তারা কি এবারেও ধর্ষকের পক্ষ নিয়ে ফুলের মালা দিয়ে বরন করে আনবে? মেয়ের মা এবং বোন মিলেই এখনও অসহায়ের মত পরে আছে হাসপাতালে। তাদেরকে সাহায্য করতে কোন তৌহিদী জনতা আসেনি, আসেনি কোন নারীবাদী সংগঠন। বাচ্চা মেয়েটার মুখে অক্সিজেন মাস্ক লাগানো। ব্যথায় একটু পর পর কাতরাচ্ছিল শুধু। বড় বোন একপাশে হাতে ধরে দাড়িয়ে আছে। মেয়েটার মা মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে আর আশ্বাস দিচ্ছে - সব ঠিক হয়ে যাবে মা কিন্তু কিছুই ঠিক হয়নি। কিশোরী মেয়েটি মৃত্যুর সাথে লড়াই করতে করতে অবশেষে মৃত্যুর কাছে হার মেনে নিলো। এই নিষ্ঠুর পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেলো আর প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে গেলো তার এই নির্মম মৃত্যুর কি কোন বিচার নেই❓আসেন কমেন্টে ২/৪ টা গালি দিয়ে নিজের দায়িত্ব পালন করে যাই। আমাদের দৌড়াত্ব তো আসলেই এই পর্যন্ত সীমাবদ্ধ। আমরা কি এর বেশি কিছুই করতে পারি না❓